সার্চ ইঞ্জিন র_্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলো কি কি

সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলো কি কি?

সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলো কি কি?

সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হল সেই ফ্যাক্টর যা একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে অর্থাৎ শীর্ষ দশে স্থান পায় ।যখন আমরা Google বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে একটি কীওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করি, আমরা প্রথম পেজে ১০টি ফলাফল দেখতে পাই। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন সার্চ ইঞ্জিন শুধুমাত্র প্রথম পেজে ১০টি ফলাফল নিয়ে আসে? কেন অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলো প্রথম পেজে আসার সুযোগ পায় না? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য, আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর জানতে হবে। আজ আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর নিয়ে আলোচনা করব। সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টরগুলো নিম্নরূপ:

 কন্টেন্ট ফ্যাক্টর

২০২০ সালের মে মাসে Google-এর মূল অ্যালগরিদম আপডেট এ র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টরগুলির মধ্যে এক নম্বরে কন্টেন্ট ফ্যাক্টরকে রেখেছে। এক্ষেত্রে গুগল ৪ টি ধাপে কন্টেন্টের মান তুলে ধরতে গুরুত্বারোপ করেছে, সেগুলো হলো-

১। কনটেন্টের মান

  • পর্যাপ্ত তথ্য, গবেষণা, প্রতিবেদন এবং বিশ্লেষণ দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে।
  • সম্পূর্ণ ও বিশদভাবে বিষয়বস্তু আর্টিকেলে ফুটিয়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ ভিজিটররা যা সার্চ করছে তাকি পুরোপুরি পেয়েছে কিনা নিশ্চিত করতে হবে।
  • বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে কন্টেন্ট লেখা বা নিবন্ধ পুনর্লিখনের চেয়ে নতুন কন্টেন্ট অবশ্যই বেশি কার্যকর।
  • কন্টেন্ট এর শিরোনাম এবং মেটা ডেসক্রিপশনের মাধ্যমে আর্টিকেলের সারমর্ম তুলে ধরতে হবে।
  •  শিরোনাম এবং মেটা ডেসক্রিপশনের সাথে মিল রেখে কন্টেন্ট লিখতে হবে।

২। কন্টেন্ট লেখকের দক্ষতা

  • এমন আর্টিকেল লিখুন যা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য এবং স্পষ্ট তথ্য তুলে ধরে।
  • এটা নিশ্চিত করা উচিৎ যে লেখক যেই বিষয়ের উপর কন্টেন্ট লিখছে লেখকের সে বিষয়ে যেন  ভাল জ্ঞান থাকে।
  • ওয়েবসাইটের সমস্ত কন্টেন্ট অবশ্যই প্রতারণা, মিথ্যা বা ভুল উপস্থাপনা থেকে মুক্ত হতে হবে

৩। কন্টেন্ট উপস্থাপনা

  • ওয়েবসাইটের আর্টিকেলগুলি যথাসম্ভব বানান এবং ব্যাকরণে সঠিক হওয়া উচিত।
  • আর্টিকেলগুলি পরিকল্পিতভাবে লিখতে হবে, তাড়াহুড়ো করে লেখা ঠিক নয়।
  • যখন প্রচুর বিজ্ঞাপন থাকে তখন লোকেরা কন্টেন্ট পড়তে বিরক্ত হয়। অতএব, ওয়েবসাইটে  সহনীয় মাত্রায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা উচিত।
  • সমস্ত ডিভাইস (মোবাইল, ট্যাব) ইত্যাদিতে যেন কন্টেন্ট সুন্দরভাবে প্রকাশিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ।

ডোমেইন ফ্যাক্টর

সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলোর মদ্ধ্যে ডোমেইন ফ্যাক্টর অন্যনতম। এক কথায় একটি ওয়েবসাইটের নাম হল ডোমেইন। “ডোমেইন” হল একটি ইন্টারনেট ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের নাম। একটি ডোমেইন নাম ইংরেজি ওয়েব ঠিকানার উপর ভিত্তি করে একটি আইপি ঠিকানার সাথে একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনকে সংযুক্ত করে। যেমনঃ “google.com”, “facebook.com”, “sheba.xyz” ইত্যাদি হল ডোমেইন নাম।

একটি ডোমেইন কিনতে, আপনাকে প্রথমে একটি নাম নির্ধারণ করতে হবে। এর পরে, আপনাকে যেকোনো প্রোভাইডার কাছ থেকে ডোমেনটি কিনতে হবে। আপনি যদি ডোমেইন হোস্টিং কিনতে চান তবে আপনাকে কমপক্ষে ২,০০০ টাকা খরচ করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপঃ  www.dinbodol.com যেখানে (.com) হল টপ লেভেল ডোমেইন, dinbodol হল সেকেন্ড লেভেল ডোমেন এবং www হল থার্ড লেভেল ডোমেইন। বিভিন্ন ধরনের ডোমেইন এক্সটেনশনের মধ্যে রয়েছে:

    • .com
    • .org
    • .gov
    • .net
    • .xyz
    • .io
    • .ai
    • .edu ইত্যাদি।

অন পেজ এসইও ফ্যাক্টর

১। টাইটেল ট্যাগে কিওয়ার্ড রাখা

যদি ফোকাস কীওয়ার্ডটি শিরোনাম ট্যাগে থাকে তবে এটি রাঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অতিরিক্তভাবে, MOZ এবং Backlinko-এর থেকে দুটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে যে শিরোনাম ট্যাগের প্রথম অংশে কীওয়ার্ড যুক্ত ওয়েবসাইটগুলি উচ্চতর র‌্যাঙ্ক করে।

২। মেটা ডেসক্রিপশনে কিওয়ার্ড রাখা  

মেটা ডেসক্রিপশনে  কীওয়ার্ড মানে আর্টিকেলটি সেই কীওয়ার্ডের সাথে প্রাসঙ্গিক বলে বিবেচিত হয়। মেটা ডেসক্রিপশনের মাধ্যমে প্রতিটি আর্টিকেলকে কয়েকটি শব্দে তুলে ধরা হয়। যদি মেটা ডেসক্রিপশনে কীওয়ার্ড থাকে তবে আর্টিকেলটি সার্চ রেজাল্টে প্রথম পেজে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৩। ইন্টারনাল এক্সটারনাল লিংক ব্যাবহার করা

আর্টিকেল/পেজে রেফারেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে অন্তত একটি ইন্টারনাল লিংক ও অন্তত একটি এক্সটারনাল লিংক ব্যবহার করতে হবে। তবে প্রয়োজনে একাধিক লিংক দেওয়া যেতে পারে। যদি আমি আমার ওয়েবসাইটের কোন  পেজের লিংক দেই তাহলে এটি ইন্টারনাল লিংক। আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইটের সাথে বাইরের কোন লিংক ব্যবহার করেন তবে এটি এক্সটারনাল লিংক।

৪। ইউআরএলে কিওয়ার্ড রাখা

ইউআরএল-এ কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করা আরেকটি প্রাসঙ্গিকতার সংকেত। এর ফলে সার্চ রেজাল্টে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

৫। কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন  

অন-পেজ এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন। কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশানের ধাপগুলি নিম্নে দেওয়া হল:

  • আর্টিকেলে পর্যাপ্ত সংখ্যক কীওয়ার্ড থাকা উচিত এবং কীওয়ার্ডের অত্যধিক ব্যবহার (কীওয়ার্ড স্টাফিং) এড়িয়ে চলা উচিত।
  •  আর্টিকেলে H1, H2 এবং H3 ট্যাগ ব্যবহার করা উচিত।
  •  আর্টিকেল যতটা সম্ভব তথ্যপূর্ণ এবং বিস্তারিত হওয়া উচিত, যা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি।
  • সাব হেডিং এ কীওয়ার্ড রাখতে হবে।
  •  প্রতিশব্দমূলক  কীওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত।

ব্যাকলিংক এসইও ফ্যাক্টর

১। লিংকিং ডোমেইন লিংকিং পেজের সংখ্যা

কোন কোন ডোমেইন থেকে একটা ওয়েবসাইট লিংক পেয়েছে তাই হচ্ছে লিংকিং ডোমেইনের সংখ্যা। লিংকিং ডোমেইন বেশি হওয়ার অর্থ হচ্ছে ওয়েবসাইটি অন্যদের থেকে অথোরিটি পাচ্ছে। যেটি সার্চ ইঞ্জিনে একটি পজিটিভ র‍্যাংকিং সিগন্যাল। একইভাবে তা বিভিন্ন পেজ লিংকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

২। লিংকিং পেজের ডোমেইন অথোরিটি

যে ডোমেইন বা পেজ থেকে লিংক পাওয়া যায় তার ডোমেইন অথরিটি যত বেশি হবে, প্রধান ওয়েবসাইট থেকে লিংক তত বেশি হবে। সুতরাং, যেসব ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথোরিটি বেশি তাদের থেকে ব্যাকলিংক নিলে ওয়েবসাইটটি সার্চ রেজাল্টে  আগে আসতে পারে।

৩। লিংকের প্রাসঙ্গিকতা

যে উৎস থেকে লিংক সংগ্রহ করা হয়েছে সেটি নিশ রিলেটেড কিনা সেটি নির্দেশ করে লিংকের প্রাসঙ্গিকতা। বিভিন্ন নিশ থেকে লিংক নেওয়ার চেয়ে প্রাসঙ্গিক নিশ থেকে লিংক গ্রহণ করলে তা সার্চ রেজাল্টে অধিকতর গুরুত্ব বহন করে। অ্যাঙ্কর টেক্সট থেকে লিংক নেওয়া হলে এর গুরুত্ব বেড়ে যায়।

৪। ডু ফলো বনাম নো ফলো লিংক 

সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর এর মধ্যে ডু ফলো লিংক অন্যতম। অন্যদিকে, নো-ফলো্ লিঙ্কগুলি র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর ভূমিকা পালন করে না, তবে নো-ফলো লিঙ্কগুলি ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিক আনতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর একটি বিস্তারিত আলোচনার বিষয়। গুগলের ২০০ টিরও বেশি র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর রয়েছে। আমরা মূল বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা আশা করি উপরের সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলো কোন একটি ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করা হলে ওয়েবসাইটটি অবশ্যই র‍্যাঙ্ক করবে।

আরো পড়ুনঃ

কীভাবে ফ্রীতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?

ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার  উপায়!

ওয়েবসাইটের ডোমেইন ও হোস্টিং কী?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *