কীভাবে ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করা যায়

কীভাবে ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করা যায়?

কীভাবে ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করা যায়?

আপনি যদি একটু গবেষণা করেন তাহলে দেখতে পাবেন যে, এখনকার প্রায় সব স্মার্ট ছেলে-মেয়েদেরই একটি বাংলা বা ইংরেজী ব্লগ সাইট রয়েছে। তারা যেহেতু প্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক জ্ঞান রাখে, তাই তারা স্মার্ট ওয়েতে টাকা ইনকাম করে। নিঃসন্দেহে, ব্লগিং অর্থ উপার্জনের একটি স্মার্ট উপায় এবং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। যেহেতু প্রায় সবারই এখন ব্লগিং সাইট রয়েছে এবং গুগলের অ্যালগরিদম দিন দিন আপডেট হচ্ছে, তাই ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফল হওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমেই বলে রাখি অনেক তরুণ-তরুণী এখন ব্লগার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।আপনি যদি গাধার মতো খেটেই যান আর বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজ না করেন তবে আপনি এই তরুণ প্রজন্মের সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে পারবেন না। তাই নিচে ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা পাওয়ার জরুরি কিছু টিপস তুলে ধরা দেওয়া হল।

ইউটিউবে একটি চ্যানেল ওপেন করা

যে রাইটার কে আপনি হায়ার করেছেন সে যখন আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য আর্টিকেল লিখবে তখন এতে আপনার ২ভাবে লাভ হবে। প্রথমত আপনি সেই আর্টিকেল টা আপনার ব্লগ সাইটে পাবলিশ করছেন। দ্বিতীয়ত, আপনি সেই আর্টিকেলটি কে স্ক্রিপ্ট হিসেবে ব্যবহার করে আপনার ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে পারছেন। যেহেতু আপনার YouTube ভিডিওগুলি আপনার ব্লগ সাইটের সাথে সম্পর্কিত, তাই আপনার ভিডিওগুলিকে আপনার আর্টিকেলে এম্বেড করা উচিত৷ কারণ কেউ যখন আপনার ব্লগ পড়বে, তখন যেন তারা ভিডিও লিঙ্কে ক্লিক করে সহজেই সমস্ত তথ্য পেয়ে যায় এবং তার সাথে সাথে আপনার ভিডিওর ভিউও বাড়বে। আরেকটি সুবিধা হল আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমে যাবে কারণ ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে এবং ভিডিও দেখতে বেশি সময় ব্যয় করে। কম বাউন্স রেট আপনার ওয়েবসাইটকে Google-এ আরও ভাল র‌্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে।  আবার ইউটিউব এর ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথে ভিডিও এর ডেসক্রিপশন বক্সে আর্টিকেল লিংক দিয়ে দিলেন।এইভাবে আপনি আপনার YouTube এর মাধ্যমে ট্রাফিক পাবেন। ইউটিউবের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট মার্কেটিংও করাও হয়ে যাবে।

আপনার ব্লগিং সাইট কে ব্র‍্যান্ড হিসেবে তৈরি করা

ব্লগিং ক্যারিয়ারে সাফল্য বলতে শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিনে ট্র্যাফিক জেনারেট করা নয়। আপনার ব্লগিং সাইটকে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করুন যাতে ব্লগিং সাইটের নামটি তার পরিচয় বহন করে। ব্র্যান্ড হিসাবে একটি ব্লগিং সাইট তৈরি করার একটি উপায় হল আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো। আপনার ওয়েবসাইটের ব্লগগুলিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করুন যাতে আপনার ওয়েবসাইটটি আরও বেশি মানুষের কাছে তুলে ধরা যায়৷ আপনাকে আপনার ব্লগে একটি ইমেল সাবস্ক্রিপশন বক্সও ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে লোকজন আপনার ব্লগের সাথে ই-মেইল এর মাধ্যমে কানেক্টেড থাকতে পারবে। আপনি যখনই আপনার ব্লগিং সাইটে আর্টিকেল পাবলিশ করবেন তখন আপনার ই-মেইল সাবস্ক্রাইবাররা নোটিফিকেশন পেয়ে যাবে। ফলে আপনি সার্চ ইঞ্জিন ছাড়াও ডিরেক্ট ই-মেইল এর মাধ্যমে ট্রাফিক পেয়ে যাবেন। ছোট কৌশলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্লগিং সাইটের এক্সপোজার বাড়ান যাতে এটি সবার কাছে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি  পায়।

কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন তা নির্ধারণ করা

দেখুন, ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জনের অনেক উপায় রয়েছে। আপনি কিভাবে অর্থ উপার্জন করবেন তা প্রথমে নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্য পরিষ্কার হলে অগ্রগতি অনেক সহজ হয়ে যায়। আপনি যদি গুগল অ্যাডসেন্স দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তবে আপনাকে আর্টিকেল গুলিকে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। আবার, আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান, তাহলে শুরুতেই ভালো নিশ বাছাই করে ব্লগ তৈরি করতে হবে। আপনি যদি গুগল অ্যাডসেন্স দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তবে তাহলে লাভজনক কিওয়ার্ডগুলো খুঁজে বের করুন এবং আর্টিকেল লিখুন। নিবন্ধ লেখার জন্য লেখকদের নিয়োগ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন কারণ তারা আপনাকে নিম্নমানের নিবন্ধ সরবরাহ করতে পারে না। নিম্নমানের আর্টিকেল লিখলে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না। যদি আপনার লক্ষ্য Google Adsense থেকে অর্থ উপার্জন করা হয়, আমি আপনাকে সঠিক কীওয়ার্ডগুলি বেছে নেওয়ার এবং তারপরে আপনার ওয়েবসাইটে একজন ভাল মানের কন্টেন্ট পাবলিশ করার পরামর্শ দেব।

আপনার ব্লগিং সাইট এর প্রোমোশন করা

কথায় আছে “প্রচারেই প্রসার”।বর্তমানে, প্রতিটি অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা ভিডিও যা রাতারাতি মার্কেট দখল করে নেওয়ার গোপন রহস্য হল তারা তাদের অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের প্রোমোশন অব্যাহত রেখেছে। আজকাল সবাই অনলাইন মার্কেটপ্লেসকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়। আপনি আপনার ব্লগ প্রোমোশন এর জন্য Facebook, Twitter এবং Instagram ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ব্লগে কোন কন্টেন্ট পাবলিশ করার পরে, তা প্রোমোশন এর জন্য আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে শেয়ার করুন৷ এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিতে আপনার ওয়েবসাইটের প্রোমোশন চালানোর জন্য আপনাকে কোনও অর্থ ব্যয় করতে হবে না। এটা সম্পূর্ণ ফ্রী কিন্তু এখানে কিছু অসুবিধা আছে। আপনার বিজ্ঞাপন প্রচার সবার কাছে নাও পৌঁছতে পারে। এই ক্ষেত্রে, আপনি পেইড অ্যাডভারটাইজ কে বেঁছে নিতে পারেন। এতে আপনার টাকা খরচ হবে, কিন্তু বিনিময়ে আপনি অনেক সুবিধা পাবেন।  অর্থাৎ মূল কথা হলো আপনি যেকোনো উপায়ে আপনার ওয়েবসাইট এর প্রোমোশন চালান।

হার্ড ওয়ার্ক এর পরিবর্তে স্মার্ট ওয়ার্ক করা

বর্তমানে ব্লগিং এর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শব্দ হল ” কম্পিটিশন “। তাই যারা তথ্য ও কনসিসটেন্সি  বজায় রাখতে পারবে তারাই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে। এখানে আপনি যেভাবে স্মার্ট কাজ করতে পারেন:-

  • প্রতিদিন অন্তত একটি  করে আর্টিকেল পাবলিশ করা।
  • তথ্যবহুল, ইউনিক এবং ডেনসিটি ঠিক রেখে আর্টিকেল পাবলিশ করুন।
  •  যদি একা নিবন্ধ লেখা সম্ভব না হয় তবে একজন লেখক নিয়োগ করুন।
  • কম্পিটেটিভ বেশি এরকম কিওয়ার্ড বাঁছাই করা থেকে বিরত থাকুন কেননা এগুলো গুগলে র‍্যাংক করাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। ভেবে চিনতে কিওয়ার্ড বাঁছাই করুন।

কাজের ক্ষেত্রে কখনোই আজ নয় কাল করবো  বললে চলবে না। কারণ প্রতিদিন প্রায় ৫ মিলিয়ন আর্টিকেল পাবলিশ হচ্ছে। তাহলে আপনি যদি একদিন আর্টিকেল পাবলিশ করা বাদ দেন তাহলে ভাবুন আপনি কত লোকের পেছনে পরে গেলেন। তাই ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা পেতে চাইলে উপরের পয়েন্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং মেনে চলুন তাহলে অবশ্যই সফলতা পাবেন এবং কাজ করার পূর্বে কাজের সমস্ত প্ল্যানিং করে নিন।

আরও পড়ুনঃ

ফ্রিল্যান্সিং এ সফলতা অর্জনের কৌশল কি?

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ইংরেজি জানা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *