কীভাবে লেখালেখি করে অনলাইনে আয় করা যায়

কীভাবে লেখালেখি করে অনলাইনে আয় করা যায়

আপনি চাইলেই এই লেখালেখির মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন খুব সহজেই। অনলাইনে লেখালেখি করে আয়ের সুযোগ রয়েছে অনেক। যেমন— আপনি চাইলে ব্লগ, আর্টিকেল, পণ্যের বিবরণ, পর্যালোচনা ইত্যাদি লিখতে পারেন। কিন্তু অনেকে  জানেন না কোথায় বা কিভাবে শুরু করবেন? আপনার বিশেষ কিছু জানার দরকার নেই। নীচে আমি আপনাদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিব যা আপনাকে অনলাইন লেখার মাধ্যমে কিছু অর্থ উপার্জন করতে সহায়তা করবে।

আমি ধরে নিচ্ছি আপনি অনলাইনে লেখালেখি এবং উপার্জন সম্পর্কে কিছুই জানেন না । কিন্তু আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে,  আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার আসলে কী করা উচিত। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেই কীভাবে অনলাইনে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করা যায়ঃ

অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করতে হলে কী কী লাগবে?

  • একটি কম্পিউটার (ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ)
  • একটি স্মার্টফোন (বিশেষত ৪ জিবি র‍্যামের বেশি)
  • দক্ষতা
  • ধৈর্য্য
  • কৌতূহলী মন

কী লিখলে অনলাইনে আয় করা যায়?

যেকোনো কিছু লিখে আয় করতে পারবেন । আপনি সবচেয়ে ভালো জানেন বিষয় সম্পর্কে লিখতে শুরু করুন ।

গল্প-উপন্যাস-বা কথাসাহিত্য লেখা এড়িয়ে চলুন, তবে সাহিত্যে আগ্রহী হলে বিখ্যাত লেখকদের বই রিভিউ করতে পারেন ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আপনি সম্প্রতি Google, Bing বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে যে বিষয়গুলি অনুসন্ধান করেছেন সেগুলির উপর ডেটা সংগ্রহ করে  লিখতে পারেন ৷ আপনি যদি প্রযুক্তি, অর্থ, আইন, স্বাস্থ্য নিয়ে লিখতে পারেন, তাহলে আপনার আয় আরও বেশি হবে। প্রথমে শিক্ষা নিয়েও লিখতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে টিকে থাকা কঠিন হবে, কারণ আয় কম হবে।

একটি ভালো আর্টিকেল বা নিবন্ধ কীভাবে লিখতে হয় ?

ভালোর কোনো শেষ নেই। আপনার জন্য যা ভাল তা আমার জন্য ভাল নাও হতে পারে। আপনি যা লিখবেন তা বেশিরভাগ মানুষের কাছে অনুরণিত হবে, আপনার কাছে মূল্যহীন হতে পারে। তাই আপনাকে আপাতত এই ভালো-মন্দ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে যে বিষয়গুলি আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে তা নীচে তালিকাভুক্ত করা হলঃ

  • যে বিষয়ে লিখবেন সেই বিষয়টা সম্পর্কে ভালো করে জানুন, ভাসাভাসা জ্ঞান থাকা চলবে না।
  • একটি মানসম্পন্ন টাইটেল চয়ন করুন যাতে সবাই আপনার সম্পূর্ণ নিবন্ধ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার সাহিত্য চিন্তা এড়িয়ে চলুন; বাস্তবিক দিক থেকে চিন্তা করুন।
  • সহজভাবে লিখুন যাতে যে কেউ আপনার লেখা পড়ে তা বুঝতে পারে।
  • যতটা সম্ভব জটিল বাক্য লেখা থেকে দূরে থাকাই ভাল, তবে যখন প্রয়োজন তখন লিখুন
  • আপনার টপিকবা বিষয়ের নাম কয়েকবার লেখার মাঝে আনার চেষ্টা করুন।
  • সাব-হেডিং দিয়ে লিখুন। আপনি যেমন ছোটবেলায় “আমাদের স্কুল”, “বর্ষা ঋতু”, “মানব কল্যাণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি” ইত্যাদি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ঠিক তেমনি ভাবে লেখার চেষ্টা করুন।
  • উপযুক্ত ছবি যোগ করুন।
  • আর্টিকেলের শেষে উল্লেখ করুন যে কোন স্থান থেকে উপাত্তবা তথ্য এসেছে। আপনি চাইলে মূল লেখার মধ্যেওবলতে পারেন। রেফারেন্স বাধ্যতামূলক।
  • লেখার পরে আবার চেক করুন। তবে চেক করার আগে, বিরতি নিতে ভুলবেন না, এই বিরতির সময় অন্য কাজ করুন।
  • ইংরেজিতে লিখুন, এতে অনলাইনে ৮/১০ গুণ বেশি আয় হবে। বাংলায় লিখলে একঘেয়ে হয়ে যাবেন কারণ আয় খুবই কম।

আয় করবেন যেভাবে?

এবার আসল কথায় আসা যাক। আপনি আপনার মূল্যবান লেখা কোথায় রাখবেন, কে আপনাকে টাকা দিবে? অনেক এজেন্সি আছে, এমন প্ল্যাটফর্ম আছে যারা অন্যদের সম্পর্কে কিছু লেখে, তারা তার জন্য কিছু টাকা দেয়। কিন্তু আপনি জানেন না কোথায় বা কার কাছ থেকে বা কিভাবে আপনি উপার্জন করবেন। এখন করনীয় কি?

স্থানীয় প্রোভাইডারের কাছ থেকে একটি ডোমেন  কিনুন। আপনি ডোমেইন কেনার জন্য বিদেশী কোম্পানির কাছেও যেতে পারেন। কিন্তু আপনার কাছে  ডুয়্যাল কারেন্সি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড না থাকলে , আমার পরামর্শ হল আপনি বর্তমানে যে দেশে আছেন সেই দেশের কোম্পানি থেকে কেনার জন্য।

বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত কিছু ডোমেইন বিক্রয় কোম্পানি হল-

  • হোস্টিং বাংলাদেশ (Hosting Bangladesh)
  • ওয়েবহোস্ট বাংলাদেশ (WebhostBD)
  • ভোল্টা হোস্ট বিডি (VoltahostBD)

ডোমেইন কেনার পর কী করবেন ?

এই লিংকে  https://www.blogger.com যান ।এখানে একটি ব্লগ তৈরি করুন ।

কীভাবে ব্লগার থেকে ব্লগ তৈরি করতে হয় তা না জানলে ইউটিউবে সার্চ করুন। অনেক ভিডিও আছে। YouTube সার্চ বারে, how to create a blog on blogger বা create blogspot লিখে সার্চ করুন। এইধরনের কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলে চলে আসবে। আপনার ডোমেইন সেট করে যেখানে ব্লগ তৈরি করা যাবে।

ব্লগ পোস্টিং

সেখানে আপনার লেখা আর্টিকেলগুলো ধীরে ধীরে পোস্ট করুন। কিভাবে পোস্ট করবেন তা ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন।আপনি যদি ইউটিউবে  ” blogspot tutorial”  লিখে সার্চ করেন তাহলে আপনি ব্লগ পোস্ট সম্পর্কে এমন ভিডিও পাবেন যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানতে বা বুঝতে পারবেন ।

গুগল অ্যাডসেন্স

ব্লগে পোস্ট করার কয়েকদিন পর, আপনাকে অ্যাডসেন্স অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হবে । অনেকেই জানতে চায়  কখন অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন  করা ভাল । আপনি যেকোন সময় অ্যাডসেন্স অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইট সুসংগঠিত না হওয়া পর্যন্ত আবেদন না করাই ভাল। আপনি প্রায় ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারেন।

পরিশেষে বলতে চাই আপনি যদি গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করতে চান তবে প্রথম যে বিষয়টি এড়াতে হবে তা হল অন্যদের কপি করবেন না। আপনি যদি অন্য লোকের লেখা কপি করেন তাহলে আপনি আপনার ব্লগ হারাতে পারেন।

কিন্তু আপনি চাইলে কিছু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রেফারেন্সের মাধ্যমে (হাইপারলিঙ্কের মাধ্যমে) কপি করতে পারেন।

আপনি যদি আপনার মধ্যে কপি করার টেনডেন্সি রাখেন তবে আপনি কোন ব্লগ থেকে  অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না। আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভালের আগে তো কপি করতে পারবেনই  না, সেক্ষেত্রে আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভালের অনুমতি পাবেন না।

আপনি যদি Google AdSense অনুমোদন পান, তাহলে সর্বনিম্ন $100 হলে আপনি আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তা তুলতে পারবেন।  তবে এর আগে আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করতে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে মেইল আসবে, সেই মেইলে  একটি পিন কোড থাকবে এই চিঠিতে একটি পিন কোড রয়েছে। ঠিকানাটি এই কোড দিয়ে ভেরিফাই করতে হবে ।


আরও পড়ুনঃ

২০২৩ সালে কোন কোন ফ্রিল্যান্সিং স্কিল শিখতে শিখতে পারি?

চ্যাটজিপিটি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গুগোলের নতুন চ্যাটবট গুগোল বার্ড

সহজে উচ্চতর গণিত শেখার উপায় কী?

ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি স্কিল প্রয়োজন

লেখা থেকে মিউজিক তৈরি করছে গুগলের এআই টুল

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *