অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করবেন?
কমিশনের ভিত্তিতে কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রয় করে দেয়াকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। উদাহরণস্বরূপঃ বিশ্বব্যাপী Amazon, E-Bay, Alibaba Express এমনকি বাংলাদেশের Daraz, Pickaboo, AjkerDeal ইত্যাদি একটি অ্যাফিলিয়েট হিসেবে মার্কেটিং করে কমিশন অর্জন করা যায়। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বাস্তব প্রয়োগ হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?
আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েট হিসেবে মার্কেটিং করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাদের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে এবং তাদের প্রোমোশন এবং বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।আপনি নিম্নলিখিত পয়েন্ট গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লেই ভালোভাবে বুঝতে পারবেন
অ্যাফিলিয়েট রেজিস্ট্রেশন:অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে, আপনি যে মার্চেন্টের পণ্য বিক্রি করেন তিনি আপনাকে একটি লিঙ্ক প্রদান করবেন। প্রতিটি অ্যাফিলিয়েট ভিন্ন ভিন্ন লিঙ্ক পাবে। যদি কেউ এই লিঙ্কের মাধ্যমে একটি পণ্য বা পরিষেবা ক্রয় করে, তবে তাদের কমিশন অ্যাফিলিয়েটের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। উদাহরণস্বরূপঃ আপনি যদি একজন অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েট হন, তাহলে পণ্যের ছবি এবং লিঙ্ক পেতে আপনাকে অবশ্যই Amazon SiteStripe ব্যবহার করতে হবে। আপনি কেবল নিবন্ধনের পরেই এই অপশন পাবে্ন।
বিভিন্ন মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ: মার্কেটিং এর জন্য অবশ্যই কিছু টুলস প্রয়োজন। আপনার টুলসগুলি যত শক্তিশালী হবে, আপনার বিক্রয় তত সহজ হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে আপনার যা যা প্রয়োজন:
ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজ যে থাকতেই হবে এমনটা নয়। কিন্তু আপনার হাতে যত বেশি চ্যানেল বা মিডিয়া থাকবে, তত বেশি মার্কেটিং করার সুযোগ পাবেন।
অনালাইন প্রমোশন বা ডিজিটাল মার্কেটিং: শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট, একটি ইউটিউব চ্যানেল বা একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থাকলেই হবে না। আপনার যদি ভিজিটর না আসে তাহলে সেলস কখনো বাড়বে না। আর ভিজিটর আনতে হলে আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং ইত্যাদির মতো মৌলিক ডিজিটাল মার্কেটিং দক্ষতা আয়ত্ত করতে হবে। তার মানে আপনাকে যা করতে হবে-
- ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য ভাল মানের কন্টেন্ট
- ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভালো মানের ভিডিও এবং
- নিয়মিত সোশাল মিডিয়া পোস্ট
মার্কেটপ্লেস ও প্রোডাক্ট সিলেকশন: অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মার্কেটপ্লেস আছে। সেখান থেকে আপনি যেকোনো মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। মনে রাখবেন একাধিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করার চেয়ে একটি মার্কেটপ্লেসে কাজ করা ভালো। মার্কেটপ্লেস বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট সবসময়ই পছন্দের তালিকার সবার শীর্ষে থাকে।
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েটস ছাড়াও নতুনদের জন্য ClickBank.com, ClickBetter.com, Payspree.com, PayDot.com, ClickSure.com, VIPAffiliates.com, TwistDigital.com, LinkShare.com, Cj.com ইত্যাদি। এই মার্কেটপ্লেসগুলোর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে কিছু ভালো টিউটোরিয়াল রয়েছে যা আপনার কাজকে আরও সহজ করে তুলবে।
এখন আপনাকে প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে হবে। যেকোন প্রোডাক্ট নির্বাচন করার সময়, আপনাকে পণ্যটির কমিশনের হার এবং প্রোডাক্টটি মার্কেটে বেশ ভালো চলছে কিনা। কিনা সেদিকে লক্ষ্য দিতে হবে। তাই, আপনি রিসার্চ করুন এবং খুঁজে বের করুন যে কোন প্রোডাক্টগুলির অনলাইনে চাহিদা বেশি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কি পরিমাণ আয় করা সম্ভব?
এখানে কয়েকটি ব্যাপারের উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে আয়ের হার বা পরিমাণ কি রকম হতে পারে। যেমন-
- প্রোডাক্টের কমিশন রেট কত
- প্রতি ইউনিট প্রোডাক্টের মূল্য কত
- আপনি কত ইউনিট প্রোডাক্ট সেল করতে পেরেছেন
- মোট বিক্রয়কৃত প্রোডক্টের মূল্য কেমন
আগেই বলছি যে, আয়ের কোনো সীমা নেই। আপনি যত বেশি সেল জেনারেট করতে পারবেন, তত বেশি কমিশন পাবেন। এমন অনেক মার্কেটার আছেন যারা প্রতি মাসে ৩-৪ লক্ষ টাকা আয় করেন এবং কেউ কেউ এক টাকাও উপার্জন করতে পারেন না। তাই এটা পুরোটাই ভাগ্যের ব্যাপার।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য প্রথম তিন মাস ইউটিউব ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং আর্টিকেল পড়ে ধারনা নিতে পারে। এই ক্ষেত্রে, আপনি আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং এবং অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে পারেন। আর কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?
কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করবেন?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে সফল ক্যারিয়ার গড়ার উপায় কী?