কীভাবে একজন ভালো স্টুডেন্ট হয়ে উঠবেন?
শিক্ষাজীবন হচ্ছে নিজেকে গড়ার সব থেকে উৎকৃষ্ট সময়। কে না চায় ভালো শিক্ষার্থী হতে! আমরা সবাই ভালো শিক্ষার্থী হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমরা নিজেদের প্রতি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী হতে পারি না। এবং অনেক সময় দেখা যায় আমরা আমাদের পুরোনো বদ অভ্যাসগুলো কাটিয়ে উঠে পড়াশুনায় মনোযোগ দিতে পারিনা। যার জন্য বারবার অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ি। ভালো ছাত্র হতে হলে নিজেকে একজন আদর্শ ছাত্র হিসেবে গড়ার শপথ নিতে হবে।
সারা দিন-রাত বইয়ের পড়া নিয়ে পড়ে থাকলেই কেউ ভালো শিক্ষার্থী হতে পারে না। একজন ভালো ছাত্রের অনেক গুণাবলি রয়েছে। সেই সকল গুণাবলি আত্মস্থ করার মাধ্যমেই তুমি হতে পারবে একজন ভালো ছাত্র
একজন ভালো ছাত্র হতে গেলে জানার বিকল্প নেই। একজন ভালো ছাত্রের প্রতিটি বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকতে হবে। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য জেনে নিয়ে নিজেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখা একজন ভালো স্টুডেন্টের অনেক গুলো বৈশিষ্ট্যর মধ্যে অন্যতম। তাই একাডেমিক পড়ার বাইরেও প্রতিদিন এক্সট্রা কিছু শিখতে হবে তোমাকে।
তোমাকে অবশ্যই সবার সাথে ভালো ব্যবহার রাখতে হবে। কারণ ব্যবহারেই তোমার সাথে মানুষের সখ্যতা গড়ে উঠবে। তোমার কথা-বার্তায়, আচার-আচরণে যেন কখনো অহংকার বা দাম্ভিকতা প্রকাশ না পায় সে দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আর একজন ভালো স্টুডেন্ট শুধুমাত্র পড়ালেখাই ভালো নয়। সবার সাথে নিজের আচার-ব্যবহারও ভালো রাখতে চেষ্টা করে। সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে। তাই তোমারও সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করে সবার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত।
একজন ভালো শিক্ষার্থী শুধু একাডেমিক পড়ালেখাতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না পাশাপাশি নতুন কিছু সৃষ্টি করারও চেষ্টা করে। সৃজনশীলতার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী নিজের নতুন নতুন চিন্তা ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমাজ এবং দেশের উন্নতিতে অবদান রাখতে পা
ভালো ছাত্র হতে অবশ্যই নিয়ম মাফিক কাজ করতে হবে। আজকের কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে না রেখে সময়মতো করতে হবে। প্রতিদিনের কাজের একটি লিস্ট তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজগুলো করতে হবে এবং প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করে শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকতে হবে।
যেকোনো কাজের জন্যই প্রথমে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়। প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে যে “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় হয়।” স্বপ্নই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। প্রথমে তুমি জীবনে কি হতে চাও তা ঠিক করো। তারপর সে অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাও। আর বারবার তোমার এই স্বপ্নের কথা স্মরণ করো। তাহলেই তোমার সব কাজে সফলতা আসবে।
একজন ভালো শিক্ষার্থীর জন্য অধ্যবসায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের জীবনে চলার পথে বাধা বিপত্তি আসবেই। অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সেসব অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অধ্যবসায়ের গুণেই মানুষ অসাধ্যকে সাধন করতে পারে। তাই সবসময় নিজের প্রতি দৃঢ় মনোবল রেখে সামনে চলা উচিত।
কথায় আছে “পরিশ্রম হচ্ছে সাফল্যের চাবিকাঠি”। তাই তুমি যে কাজটাই করতে চাও না কেন সেই কাজে সফল হতে পরিশ্রম তোমাকে করতে হবেই। পরিশ্রম ছাড়া সফলতার কোনো শর্টকাট ওয়ে নাই। তাই একজন ভালো শিক্ষার্থী হতে গেলে তোমাকে সবার থেকে বেশী পরিশ্রম করে পড়ালেখায় নিজেকে এগিয়ে রাখতে হবে।
স্টুডেন্ট লাইফ হচ্ছে মানবজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই ছাত্রজীবন থেকেই সময়ের কাজ সময়ে সম্পন্ন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভালো ছাত্র হতে হলে সময় সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। আজকের কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখা যাবে না। প্রয়োজনে নিজের সময়মতো কখন কোন কাজ করবে, কখন কোন বিষয়টি পড়বে তার একটি লিখিত রুটিন তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ করা যেতে পারে। তাছাড়াও অনলাইনে অনেক টাইম প্ল্যানার অ্যাপ রয়েছে সেখানেও নিজের পছন্দ অনুযায়ী টাইম সেট করে কাজ গুলোকে ভাগ ভাগ করে করতে পারো। সময়ের অপব্যবহার করে কখনোই ভালো শিক্ষার্থী হওয়া যায় না। তাই সময়কে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে এখন থেকেই সামনে আগানো উচিত।
একজন ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য তোমাকে অবশ্যই পরিকল্পনা করে পড়ালেখা করতে হবে। কখন কোন বিষয়টি পড়বে, কখন লিখবে, কখন রিভিশন দিবে এসবটাই একটা পরিকল্পনা করে তারপর শুরু করা উচিত। কোন বিষয় কতটুকু সময় পড়লে তোমার পারফেক্ট প্রিপারেশন হবে তার পরিকল্পনা করে পড়া শুরু করলে খুব সহজেই পড়াটা শেষ করতে পারবে।
একজন ভালো শিক্ষার্থীর জন্য ধৈর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুমি যতই ভালো ছাত্র হও না কেন জীবনের কঠিন সময়গুলোতে ধৈর্য হারালে সামনে আগাতে পারবে না। ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে সৃষ্টিকর্তা তার প্রতিদান অবশ্যই দিয়ে থাকেন। তাই হতাশাগ্রস্ত না হয়ে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে ধৈর্য ধরে নিজের কাজে মনোনিবেশ করতে হবে।
কোন কাজে সফল হতে নিজের প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও আস্থা থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস হচ্ছে ভালো শিক্ষার্থীদের একটি বড় গুণ। আত্মবিশ্বাস না থাকলে কোন কাজই সঠিকভাবে করা যায় না। ‘আমি পারবোই’ নিজের প্রতি এই বিশ্বাস রেখে যেকোনো কাজ শুরু করলে সফলতা আসবেই।
- পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ
- সবকিছুতে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ
- পড়ালেখায় গভীর মনোযোগ
- শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী চলা
- শিক্ষক অপছন্দ করেন এমন কাজ থেকে বিরত থাকা
- সহপাঠীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
- পড়ালেখার ক্ষেত্রে লজ্জাশীলতা পরিহার করা
- ক্লাসে কোনকিছু না বুঝলে সাথে সাথে দাড়িয়ে শিক্ষককে প্রশ্ন করা
- নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা
- সবকিছু বুঝে পড়ার অভ্যাস করা
- শিক্ষক যা পড়াবেন সাথে সাথে নোট করে নেওয়া
- প্রতিদিন অনুশীলন করে ক্লাসে যাওয়া
- তোমার প্রতিষ্ঠানের যেকোনো অনুষ্ঠান নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করা
- ক্লাস চলাকালীন কথা না বলে নিজে মনোযোগ দেওয়া এবং অন্যদের মনোযোগ দিতে
আরো পড়ুনঃ
কীভাবে ভালো প্রেজেন্টেশন দেবেন?