মশা মারার ব্যাট কীভাবে কাজ করে

মশা মারার ব্যাট কীভাবে কাজ করে?

মশা বা পোকামাকড়ের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে মশার ব্যাট খুবই জনপ্রিয়। এই ব্যাটের মাধ্যমেই সহজেই উড়ন্ত মশা বা অন্যান্য পোকামাকড়কে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মেরে ফেলতে পারে। এটি মশা নিধনের একটি অত্যন্ত নিরাপদ এবং কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এটি ব্যবহার করার সময় কয়েলের ধোঁয়া বা অ্যারোসল গ্যাস নিঃশ্বাস নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই মশা নিরোধক ব্যাট কীভাবে কাজ করে তা জানতে আমরা অনেক কৌতূহলী। মশা মারার ব্যাটের পেছনে কাজ করে তড়িৎবিদ্যুৎ। মূলত, এই ব্যাট ভোল্টেজ বাড়িয়ে মশাকে শক  দিয়ে কাজ করে।

আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো কিভাবে এই মশার মারার ব্যাট কাজ করে। এই ব্যাটটি মূলত একটি সাধারণ সার্কিট দ্বারা তৈরি। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে আমরা মশা মারার ব্যাট সম্পর্কে জেনে নেইঃ

মশা মারার ব্যাটে কি থাকে?

এই ব্যাটের পুরো সার্কিট বোর্ডই মূলত লুকানো থাকে মশার ব্যাটের হাতলে। ব্যাটে তিনটি প্রধান নেট থাকে, মাঝের জালটি পরিবাহী এবং বাকি দুটি নেট প্রধানত নিউট্রাল হিসাবে কাজ করে।

সাধারণত মশা ব্যাটের মধ্যে যে জিনিসগুলি পাওয়া যায় তা হল:

  • এসি ক্যাপাসিটর
  • ফুল ব্রিজ রেক্টিফায়ার
  • রিচার্জেবল ব্যাটারি
  • ইনভারটার
  • অসিলেটর
  • স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার
  • নেট বা গ্রিড

প্রায় সবগুলোই একসঙ্গে মশার মারার ব্যাট হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি আইটেম একটি ভিন্ন ফাংশন রয়েছে । আসুন এই বৈশিষ্ট্যগুলির কিছু আলোচনা করা যাক।

এসি ক্যাপাসিটর: এসি ক্যাপাসিটর মূলত ব্যাটারি চার্জ করার সময় টানা এসি পাওয়ার কমিয়ে সহজেই ব্যাটারি চার্জ করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ,এসি ক্যাপাসিটর আপনার প্লাগ থেকে কারেন্ট নিয়ে ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ফুল ব্রিজ রেকটিফায়ার: ফুল ব্রিজ রেকটিফায়ার এসি পাওয়ারকে ডিসি পাওয়ারে রূপান্তর করে। ব্যাটারি চার্জ করার জন্য মশার ব্যাট মূলত সরাসরি কারেন্ট ব্যবহার করে। তাই এটি সার্কিটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

রিচার্জেবল ব্যাটারি: ব্যাটারি চার্জ সঞ্চয় করে এবং পুরো ব্যাটকে পাওয়ার দিয়ে থাকে । সাধারণত লেড অ্যাসিড ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। ব্যাটারির ক্যাপাসিটি ব্যাটভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।

ইনভারটারঃ ইনভারতার ব্যাটারিতে সঞ্চিত বিদ্যুৎকে ডিসি থেকে লো-ভোল্টেজ এসি-তে রূপান্তরিত করে।

অসিলেটর: অসিলেটর বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এবং বিদ্যুৎ বৃদ্ধি করে।

স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার: এটি মশা মারার ব্যাটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার উচ্চ ভোল্টেজ এবং কম কারেন্ট উৎপন্ন করে। এই কারেন্ট ব্যাট স্পার্ক করবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

নেট বা গ্রিড: এই গ্রিডে যেখানে স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার দ্বারা উত্পন্ন কারেন্ট প্রবাহিত হয়। তিনটি নেট দেওয়া হয়, যার মধ্যে মধ্যবর্তী জালটি ধনাত্মক প্রবাহ হিসাবে কাজ করে এবং দুটি বাইরের জাল একটি ঋণাত্মক বা নিরপেক্ষ প্রবাহ হিসাবে কাজ করে।

মশা মারার ব্যাট কীভাবে কাজ করে

এই ব্যাট খুব সহজ উপায়ে কাজ করে। প্রথমত, একটি বৈদ্যুতিক উৎস থেকে ব্যাটারিতে চার্জ জমা হয়। স্টেপ-আপ ট্রান্সফরমার তারপর এই শক্তিকে উচ্চ-ভোল্টেজ শক্তিতে রূপান্তর করে। পোকামাকড় এবং মশা এই পাওয়ার গ্রিড স্পর্শ করার সাথে সাথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে মশা মারা যায়। মাঝখানের জালসহ দুটি জালের একটিকে মশা স্পর্শ করার সাথে সাথে একটি ক্লোজ সার্কিট তৈরি হয়। অর্থাৎ, মশা যখন সার্কিট সম্পূর্ণ করে তখন মশার শরীর দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়। ফলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মশা মারা যায়। অর্থাৎ, মশারা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় কারণ তারা বিদ্যুতের পরিবাহী হিসাবে কাজ করে। মূলত এভাবেই তৈরি হয় মশার ব্যাট।

যাইহোক, এই ব্যাটটি মানুষের জন্য বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বা পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও তৈরি করে। তাই মশা মারার ব্যাট  ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যেহেতু মানবদেহ বিদ্যুতের পরিবাহী, তাই বর্তনী সম্পূর্ণ করার সময় ব্যাটে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় আপনার হাত দুটি জালের মধ্যে স্পর্শ করলে আপনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে পারেন। অতএব, পাওয়ার চালু থাকা অবস্থায় নেট স্পর্শ করা উচিত নয়। এছাড়া এসব ব্যাটে শর্ট সার্কিটও ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এছাড়াও, এই ব্যাটে আগুন ধরার মতো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। অতএব, যদি আপনি জানেন যে এই ব্যাট কিভাবে কাজ করে, তাই এটি বিদ্যুৎপরিবাহী ব্যাট জাল থেকে দূরে রাখা ভাল।

খুব সহজ বৈজ্ঞানিক উপায়ে মশা নিধনে মশা মারার ব্যাট খুবই কার্যকরী। আপনি যদি জানেন যে গ্যাজেটটি কীভাবে কাজ করে তবে এটি ব্যবহার করা আরও সহজ হবে। সতর্ক এবং নিরাপদ থাকার জন্য এটি জানাও গুরুত্বপূর্ণ। যখন মশা মারা ব্যাট কথা আসে, তখন সবারই পুরো বিষয়টি বোঝা উচিত।


আরো পড়ুনঃ

মোবাইল দিয়ে দ্রুত টাইপ করার বিভিন্ন উপায় !

সিটি ব্যাংকের  ফ্রিল্যান্সার সলিউশন অ্যাকাউন্ট  কী ?

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়াব ?

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *